● বৃহস্পতিবার, এপ্রিল 25, 2024 | 09:45 পূর্বাহ্ন

অভিশপ্ত চেয়ার

গল্প বা সিনেমায় দেখা যায় অতৃপ্ত আত্মার ইশারায় চেয়ার নড়াচড়া করে। আবার কেউ সেই চেয়ারে বসলে মারাও যায়। এমনটা শুধু গল্প বা সিনেমাতেই মানায়, বাস্তবে নয়। বাস্তবে হবে এটা কেউ ভাবতেও পারে না। কিন্তু এমনই এক অবাক করা ঘটনা যে পৃথিবীতে আছে তা আমাদের সকলেরই অজানা। চেয়ারে বসলেই কোনো না কোনো ভাবে মারা যায়। শুনতে অবাক লাগলেও পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে কুখ্যাত হিসেবে পরিচিত একটি চেয়ার আছে। যেটি ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়র্কশায়ারের বাসবি স্টুপ ইন নামে একটি সরাইখানায় দেখা যায়। সমগ্র ইংল্যান্ডের মানুষের কাছে এই রহস্যময় চেয়ারটির কারণেই জায়গাটি রহস্যময় স্থান হিসেবে বিশেষ পরিচিত লাভ করেছে।

এর ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, ১৭০২ সালে ইংল্যান্ডে থমাস বাসবি নামে একজন অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হয়। অপরাধী যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন, মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়। তার কাছেও শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এক অদ্ভুত আবদার করে। যেই আবদার শুনে কর্তৃপক্ষও একটু অবাক হয়ে যায়। থমাসের শেষ ইচ্ছা হলো তার পানশালাতে গিয়ে নিজের প্রিয় চেয়ারে বসে জীবনের শেষ খাবার খাওয়া। তার এই ইচ্ছা পূরণ করার ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। তারপর পানশালাতে গিয়ে চেয়ারে বসে খাবার খায় এবং খাওয়া শেষ করে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে ওঠে- ‘সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি। এটা আমার প্রিয় চেয়ার। আমি আর কখনো এই চেয়ারে বসতে পারব না। তাই মারা যাওয়া আগে বলে দিচ্ছি, এই চেয়ারে যে বসবে সে হঠাত্‍ করেই মারা যাবে।’ তার এই কথা শুনে উপস্থি সকলেই অবাক হয়ে যায়।

সর্ব প্রথম ওই চেয়ারটিতে থমাসের শ্বশুর বসেছিলেন। বসার পরেই তিনি মারা যান। তারপরে আর কেউ এই চেয়ারে বসেনি। প্রায় ২০০ বছর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একজন বৈমানিক সেই পানশালাতে এসে অভিশপ্ত চেয়ারে বসেন। সে দিন তার কিছু হয়নি। কিন্তু শোনা যায় যে আর যুদ্ধ থেকে ফিরে আসেননি। এরপর আরো বেশ কয়েকজন সৈন্য সেই চেয়ারে বসেছিলেন। তারাও কখনো কখনো জীবিত ফিরে আসেননি। ১৯৬৭ সালে বিমান বাহিনীর দুইজন পাইলট ওই চেয়ারে বসেছিলেন। খোবার শেষ করে বের হয়েই দুই জনই এক ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর থেকেই চারদিকে চেয়ারটির দুর্নাম ছড়িয়ে পড়ে।

এমন অভিশাপে বিশ্বাস করেন না এমন লোকেরও অভাব ছিল না। ১৯৭০ সালে একজন স্থপতি সেই চেয়ারে বসে অভিশাপকে ভুল প্রমাণ করতে চেয়েছিল। অভিশাপকে ভুল প্রমাণ করতে গিয়ে তিনিও মারা যান। চেয়ারে বসার পর এক গর্তে পড়ে যান। পরে তার মৃত্যু হয়। অভিশাপের এই বিষয়টি অনেকেই হেসে উড়িয়ে দেন। এরপর চেয়ারে বসে কেউ ছাদ থেকে পড়ে, মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা হয়ে মারা গেছেন। এভাবে চেয়ারের সাথে সত্যি সত্যি এই আকস্মিক মৃত্যুর যোগসাজেশের অদ্ভুতুড়ে উদাহরণ দিন দিন বাড়তেই থাকল এবং চারদিকে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লো। 

শুধু যে চেয়ারটি ভুতুড়ে তা নয় অনেকেই থমাস বাসবিকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বলে জানা যায়। অভিশপ্ত এই চেয়ারটি ১৯৭২ সালে স্থানীয় একটি জাদুঘরে জমা রাখা হয়। জাদুঘরে নিয়ে যাওয়ার সময় যে লোকটি এই চেয়ার বহন করছিল, সে বিশ্রাম করার জন্য চেয়ারটিতে বসেছিল। আর ওই দিনই গাড়ি দুর্ঘটনায় লোকটি মারা যায়। এই চেয়ারে যেন কেউ বসতে না পারে সেজন্য মাটি থেকে পাঁচ ফুট উপরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এমন সব অপঘাত মৃত্যু দেখে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষও ‘বাসবির অভিশাপ’ নামের কুসংস্কারটি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিল।      

এই সম্পর্কিত আরও

আবুল কালাম
বিস্তারিত...
 আরবে ঈদের তারিখ ঘোষণা
বিস্তারিত...
813788_175
বিস্তারিত...
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
বিস্তারিত...
জান্নাতের ফুল
বিস্তারিত...
কাজী নজরুল ইসলাম
বিস্তারিত...