সিরিয়ার উত্তর পশ্চিমে স্বাধীনতাকামী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলে তুরস্কের মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতি চুক্তি সংঘঠিত হওয়ার পর বেশকিছুদিন যুদ্ধ ও সংঘর্ষ বন্ধ ছিল৷
দেশটির স্বৈরাশাসক বাশার আল আসাদ চলতি বছর একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর চুক্তি ভঙ্গ করে গত দু মাস ধরে আবার আক্রমণ শুরু করেছে। এই আক্রমণে শুধুমাত্র শিশুই নিহত হয়েছে অন্তত ২৭ জন এবং আহত হয়েছে শত শত মানুষ৷ বাড়িঘর ছাড়াও এ বোমা হামলা করে অন্তত ৭টি স্কুল গুড়িয়ে দিয়েছে৷ ছুটির দিনগুলোতে বিশেষকরে ঈদের দিনগুলোতে আক্রমণের মাত্রা তীব্র করা হয় বলে অভিযোগ বেসামরিক লোকদের৷
ফলে প্রত্যেক শিশুদের অভিভাবকরা প্রতি ঈদে তাদের আদরের সন্তানদেরকে ঈদের পোশাক কিনে না দিয়ে কিনে আনেন সাদা কাফনের কাপড়। কারণ ঈদ এলেই প্রধানত শিশুদেরই টার্গেট করে বিমান হামলা চালায় বাশার আল আসাদের বর্বর সেনারা।
বেসামরিক লোকেরা আলজাজিরাকে জানায়, গত তিন দিনে বোমা হামলায় অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। বর্তমান ঈদ এলেই আনন্দ বিসর্জন দিয়ে আমরা আমাদের কলিজার টুকরা সন্তানদের হারানোর ভয়ে থাকি। ফলে ওদেরকে ঈদের নতুন পোশাক না দিয়ে কাফন কিনে দেই৷
২০২০ সালের মার্চ মাসে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হয়। কিন্তু তা না মেনে নিয়মিত ভঙ্গ করা হচ্ছে। গত মে মাসে সংসদীয় নির্বাচনে কারচুপি করে ৯৫% ভোটে জিতে চতুর্থ বারের মতো ৭ বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আল বাশার আসাদ। তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অঞ্চলগুলোকে যে কোনো মূল্যে দখল করবে বলে কঠিন শফথ নিয়েছে।
ক্ষমতায় এসেই একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষকরে সাম্প্রতিক সময়ে গত এক সপ্তাহ যাবত দক্ষীণ পশ্চিম সিরিয়ার দিরআ, জাসিম ও ইয়াদুদাহ নামক অঞ্চল অবরোধ করে উপর্যপুরি ট্যাংক ও বিমান হামলা চালাচ্ছে। এতে বেশকিছু বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের তিনটি শিশু। আহত হয়েছে শতাধিক।
শুধুমাত্র দিরআ অঞ্চলেই ৫০ হাজারের ও বেশি লোক কঠিন অবরোধের মধ্যে অত্যন্ত করুণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তারা প্রাণ বাঁচাতে বিশ্ব বাসীর কাছে সাহায্যর আবেদন জানিয়েছেন।