শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আবারও গর্জে উঠেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পাঁচটার দিকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি টানা ১০ দিন উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। কর্মসূচির এক পর্যায়ে ১৯ জানুয়ারি থেকে এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে আরও ৪ জন শিক্ষার্থী যোগ হয়। পরে ২৬ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ও দেশের জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনশনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙান। এরপর থেকে অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ ও অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এবার ১৪ দিন পর আবারও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিকেল পাঁচটার দিকে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। প্ল্যাকার্ডগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার চিত্রও তুলে ধরেছেন। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘ফরিদের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ কেন?’, ‘ফরিদের গদি অস্তাচলে, ফরিদ যাবে রসাতলে’সহ বিভিন্ন স্লোগানে দিয়ে মিছিল করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে কিলোসড়ক ধরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে চেতনা-৭১ প্রদক্ষিণ করে আবার গোলচত্বরে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ‘আমরা অধ্যাপক জাফর ইকবালের মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। সে সময় আমাদের বলা হয়েছিল আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে আমাদের দেওয়া আশ্বাসগুলোর কোনোটিই বাস্তবায়নের কোনো প্রচেষ্টা দেখতে পারিনি। এমনকি শিক্ষার্থীদের ওপর দেওয়া দুটি মামলা এখনো ঝুলে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রায় আড়াই শ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টসহ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ এখনো করে রাখা হয়েছে। সেগুলোও চালু করা হয়নি।
অন্যদিকে আমরা আমাদের এক দফা দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা অপসারণের ব্যাপারেও কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আমাদের কঠোর কর্মসূচিগুলো থেকে সরে দাঁড়ানোর পরেও ন্যূনতম দাবি পূরণ করা হয়নি। এ জন্য এত দিন পর আমরা কঠোর কর্মসূচিতে আসতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায়ের জন্য বৃহস্পতিবারও আমরা বিক্ষোভ মিছিল করব।’