সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। বকেয়া বেতন ও বাধ্যতামূলক কোচিং ফিসহ নানা অজুহাতে ২ হাজার ৮০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। অথচ বোর্ড ফি নির্ধারণ করা হয়েছে এর অর্ধেকেরও কম। এমন অভিযোগ উঠেছে বরিশালে সব স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এদিকে, অসহায়-দরিদ্র অভিভাবকরা বোর্ড ফি’র দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ দিয়ে সন্তানদের ফরম পূরণে হাফিয়ে উঠছে। তবে অতিরিক্ত ফি আদায় করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। মানবিক বিভাগে বোর্ড ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৯৫ টাকা। অথচ নগরীর খান সড়কের মুদি দোকানি কাজী জহুরুজ্জামানের মেয়েকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী এআরএস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করিয়েছেন ৩ হাজার ২০০ টাকায়।
সেশন চার্জ বকেয়া বেতনের সাথে ফরম পূরণের বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি ছাড়াও স্কুলের বাধ্যতামূলক কোচিং ফি জুড়ে দেওয়ায় ওই অর্থ দিয়ে মেয়ের ফরম পূরণ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তার মতো বরিশালের বিভিন্ন স্কুলের দরিদ্র পরিবারের হাজার হাজার শিক্ষার্থী বোর্ড ফির দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ দিয়ে এসএসসি’র ফরম পূরণ করতে বাধ্য হয়েছেন। এসব নিয়ে প্রশ্ন করলেও কোনো সদুত্তর দেন না দায়িত্বশীলরা। দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরও কোনো রকমের ছাড় দেয় না স্কুল কর্তৃপক্ষগুলো।
অভিভাবকরা জানান, করোনাকালে স্কুলে ক্লাস হয়নি। কিন্তু স্কুলগুলো ওই সময়ের বেতনের অর্থ আদায় করছে। করোনা শিথিল হওয়ার পর স্কুলে ক্লাস না করিয়ে তারা পরীক্ষা সামনে রেখে কোচিংয়ের ফাঁদ পেতেছে। শিক্ষার্থীরা কোচিং করুক আর না করুক কোচিং ফি বাধ্যতামূলক করে এই ফি আদায় করা হচ্ছে ফরম পূরণের সময়। এতে দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর অনেক চাপ পড়ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। তারা এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬১৫ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ হাজার ৪৯৫ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগে ১ হাজার ১৭৫ টাকার বোর্ড ফি ও ৪৪০ টাকা কেন্দ্র ফি এবং ব্যবহারিক পরীক্ষার ফিসহ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬১৫ টাকা। অপরদিকে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে বোর্ড ফি ১ হাজার ৮৫ টাকা এবং কেন্দ্র ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১০ টাকা।