1. faysalislam405@gmail.com : ফয়সাল ইসলাম : ফয়সাল ইসলাম
  2. tajul.islam.jalaly@gmail.com : তাজুল ইসলাম জালালি : তাজুল ইসলাম জালালি
  3. marufshakhawat549@gmail.com : মারুফ হোসেন : মারুফ হোসেন
  4. saddam.samad.24@gmail.com : সাদ্দাম হোসাইন : সাদ্দাম হোসাইন

● Saturday, April 20, 2024 | 01:58 AM

করোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা

ফারাজানা আক্তার লিমা
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩৬১ বার পড়া হয়েছে
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের

একটি জাতির বিবেক হলো তার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা মানে হলো জাতির বিবেক ঘুমিয়ে থাকা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্য দিকগুলো এড়িয়ে যাওয়া, যা তথ্য ও প্রযুক্তির এই যুগে এসে কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দিন বন্ধ থাকলে শিক্ষার মান অনেক কমে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় জীবনে। রাষ্ট্র ব্যর্থ হতে পারে দক্ষ মানবশক্তি তৈরিতে।
এখন প্রশ্ন হলো, প্রযুক্তির এই স্রোতো ধারায় ডিজিটাল বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি অব্যাহত রাখতে কর্তৃপক্ষের করণীয় কী হতে পারে? তার একমাত্র সমাধান হলো অনলাইনে পাঠদান, যা ইউরোপ ও আমেরিকার প্রতিটি দেশে সব সময়ই করে থাকে। অনলাইনে জ্ঞান অর্জন বরঞ্চ শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আজ লিখব আমার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে।

এবার আসুন কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে।
প্রথমত, আমরা সবাই জানি যে গুগল প্লে–স্টোরে অনেকগুলো ভিডিও কনফারেন্স অ্যাপস রয়েছে। যেখানে প্রায় এক শ জন বা তার অধিক শিক্ষার্থী একই সঙ্গে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেন। রুটিন অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ে সম্মানিত শিক্ষকেরা অনলাইন ক্লাসে আসতে পারেন। সব শিক্ষার্থী একই সময়ে ভিডিও কনফারেন্সে ক্লাসে যোগ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সম্মানিত শিক্ষকদের লেকচার শোনার মনোযোগ বাড়াতে পারে বলে আমার মনে হয়। অংশগ্রহণের সংখ্যাও হতে পারে বেশি। হ্যাঁ, অনেকে বলবে, তাহলে প্রয়োজনীয় বই পাবে কোথায়? একেবারে সহজ উত্তর, সম্মানিত শিক্ষকেরা ওনাদের লেকচার ও বই ই-বুকের মতো করে বা ফাইল আকারে সব শিক্ষার্থীকে মেইল করে দিতে পারেন বা নির্দিষ্ট অনলাইন পোর্টালে পোস্ট করে দেবেন। অথবা ফেসবুক গ্রুপে দিয়ে দেবেন। আর না হয় ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে পারেন। শিক্ষার্থীরা ডাউনলোড করে পড়ে নিতে পারবেন। একেবারে সহজ উপায়।

ইউরোপ ও আমেরিকাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষা উপকরণ ও সহায়ক বই অনলাইনেই পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বই কেনার টাকাও বেঁচে যায় এবং সহজে ঘরে বসে সব উপকরণ পেয়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থী এই নিয়মের বিপক্ষে গিয়ে বলতে পারে আমরা ইন্টারনেট কিনব না! কারণ হিসেবে বলতে পারে, আর্থিক অসচ্ছলতা। এই ক্ষেত্রে মোবাইল কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য কম মূল্যে বান্ডেল প্যাকেজ দিতে পারে। যেহেতু প্রায় শিক্ষার্থীর হাতে এনড্রয়েড সেট রয়েছে, সেহেতু কেউ এই শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম থেকে বঞ্চিত হবে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিষয়। তাদের অনেকের মোবাইল সেট নেই বা দরিদ্র্যের কারণে সম্ভব না–ও হতে পারে। তাদের জন্য সরকারের বিটিভির মাধ্যমে পাঠদানই যথেষ্ট বলে মনে হয়।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের তো প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস/ল্যাব আছে এইটা কীভাবে নেওয়া সম্ভব! আমি বলব যে এখন যেহেতু মানবিক বিপর্যয়, ল্যাবে যাওয়া সম্ভব নয়, সেহেতু এখন থিউরিটিক্যাল বিষয়গুলো আগে শেষ করে নেওয়া অথবা একেবারে দুই সেমিস্টারের থিউরিটিক্যাল বিষয়গুলো একসঙ্গে শেষ করে নেওয়াটা ভালো হতে পারে। এই করোনাময় সেমিস্টারে বিভিন্ন উপায়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। প্রথমত, শিক্ষকেরা প্রতিদিন ভিডিও কনফারেন্সে ১০–১৫ মিনিট করে ওনার সিলেবাসকে ভাগ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে এককভাবে বা গ্রুপ করে প্রেজেন্টেশন নিতে পারেন এবং তা রেকর্ড করতে পারেন।

প্লেজিয়ারিজমের দিকে না ঝোঁকে, সে জন্য অবশ্যই তাদের সতর্ক করে দিতে পারেন। পরীক্ষা পদ্ধতিতে সিলিবাসের পাঠ্যবইয়ের ওপর এমসিকিউ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে ভিডিও কনফারেন্সে একসঙ্গে। এ ক্ষেত্রে সময় দিতে হবে খুবই কম। এ ক্ষেত্রে মোবাইল ও ল্যাপটপের ক্যামেরা যেন নড়াচড়া না করে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া যেতে পারে। লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারেন। কিন্তু সময় থাকবে খুব কম আর প্রশ্ন এমনভাবে করতে হবে যাতে সরাসরি বই থেকে উত্তর পাওয়া না যায়। শিক্ষার্থীদের যাতে নিজের অবলোকনের ওপর ভিত্তি করে উত্তর দিতে হয়। এতে শিক্ষার্থীর মেধা ও বিচক্ষণতার প্রসার ঘটতে পারে। প্রশ্নের মান যেন ৩-৫ নম্বরের বেশি না হয়, সেটাও ভেবে দেখা যেতে পারে। এবং তা খুব কম সময়ের মধ্যে ছবি তুলে বা স্ক্যান করে নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড দিতে পারে বা ই–মেইল করে দিতে পারে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে।

সবশেষে অনলাইনে ভাইভা নেওয়ার মাধ্যমে সেমিস্টার শেষ করতে পারেন। প্রতিটি ধাপে নির্দিষ্ট নম্বর বণ্টনের মাধ্যমে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা, এখন যেহেতু মানুষের আয়রোজগার নেই বললে চলে সেহেতু টিউশন ফি কমানোর বিষয়ে মানবিক হওয়া যেতে পারে।
সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের হাতে ই-বুক ও শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়ার জন্য দেশের বা দেশের বাইরের বিভিন্ন লাইব্রেরির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনলাইন রিসোর্স পড়তে পারেন।

ফারজানা আক্তার লিমা
প্রতিষ্ঠানঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি বিভাগ

  

বিজ্ঞাপন




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও
© ২০২৪- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । হক কথা ২৪.নেট
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )