চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অনেকেই দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তাদেরই মধ্যে একজন হলেন মমিনুল হক। কিছুদিন আগেই মহসিন কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করে তিনি সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে শ্রমিক হিসেবে চাকরিতে ঢুকেছিলেন।
তার পরিকল্পনা ছিল, পরিবারের অভাব দূর করার জন্য এক বছর চাকরি করেই স্নাতকোত্তর শেষ করবেন। কিন্তু সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর বিস্ফোরণে মমিমুলের সঙ্গে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে তার সেই স্বপ্নও।
তিন মাস আগে চাকরি শুরু করেছিলেন মমিনুল হক। কনটেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর পদে ছেলের চাকরিতে বাবা ফরিদুল হক খুশি ছিলেন। মৃত্যুর আগে মমিনুল হকের শেষ কথা হয়েছিল তার বাবা ফরিদুলের সঙ্গে। গতকাল (৫জুন) শনিবার রাতে ছেলের শেষ ফোন পান তিনি। ২৭ বছর বয়সী ছেলে মমিনুল তাকে বলেন, “বাবা এখানে কিছুক্ষণ পরে পরে ব্লাস্ট হচ্ছে।’’ এর ১০ মিনিট পরই আবার ছেলের ফোন পান তিনি।
দ্বিতীয়বার ফোনে মমিনুল বলেন, “বাবা আমার একটা পা উড়ে গেছে। আমাকে কলমা পড়ে সাফ করে দেন। হাতে ফোন রেখেই মমিনুল বলছিল, ‘আমি মাটিতে পড়ে গেছি আমাকে কেউ একটু তুলে দাও। এসময় কেটে যায় ফোনের লাইন। ওটাই ছিল ছেলের সঙ্গে শেষ কথা।”
ফরিদুল জানান, মমিনুলের সঙ্গে কথা শেষে তিনি চট্টগ্রাম শহরে থাকা নিজের স্বজনদের ফোন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে তার চাচা খোরশেদ আলম হাসপাতালে এসে ভাতিজার মরদেহ দেখতে পান। পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মমিনুল মেজ।
নিহত মমিনুলের খালাতো ভাই তায়েব দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “তিন মাস আগে মহসিন কলেজ থেকে ইকোনমিক্সে অনার্স শেষ করে চাকরি শুরু করে মমিনুল। সে আমাকে বলেছিলো মানুষ তিন-চার বছর চাকরি করেও পড়ালেখা করে, আমি এক বছর চাকরি করে ঘরের আর্থিক অবস্থা ফেরাতে চাই, এরপর মাস্টার্স পরীক্ষা দেবো। কিন্তু সেটা হলো না।”