আজ ২৮ মার্চ (সোমবার) সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট হরতাল করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করে তারা হরতাল কর্মসূচি পালন করেন। এতে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন ঘর থেকে বের হওয়া সাধারণ মানুষ। কিন্তু ভোগান্তিতে পড়লেও সাধারণ মানুষের কাছে এই হরতাল ‘যৌক্তিক’ বলে মনে হচ্ছে। তারা বলছেন, সব কিছুর দামই এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বাজারে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। দ্রুতই নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
হরতালের সময় যানচলাচল ব্যাহত হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মজীবীরা কর্মস্থলের উদ্দেশে হেঁটে যায়। হরতালের সমর্থন জানিয়ে রেজাউল ইসলাম নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, হরতালের জন্য আমাদের সাময়িক সমস্যা হলেও আমরা চাই জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়া হোক। এখন তেল-ডাল-চাল সবকিছুর দামই বেশি। আমাদের জন্য জীবন চালানো তো কঠিন হয়ে পড়েছে।
মো. হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, হরতালে কিছুটা সমস্যাতো হচ্ছেই। কিন্তু কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয়। বাজারে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে সবকিছুই আমাদের নাগালের বাইরে।
ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বলেন, ‘বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবো বলে ঘর থেকে বের হয়েছি। কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি আমাদের কাছে অনেক বড় সমস্যা। এই হরতালে সমর্থন আছে। তবে আমাদের তো কথা বলার কোন সুযোগ নেই। কথা বললেই সমস্যা।’
পাঠাও রাইড চালক সেলিম শেখ বলেন, মন চাইলেও আমরা ভালোমন্দ কিছু কিনে খেতে পারি না। গরুর মাংস তো ছোঁয়াই যায় না। সব কিছুর দাম বেশি। আবার করোনার কারণে আমাদের আয় আরো কমেছে। অথচ জিনিসত্রের দাম বেড়েই চলছে। আমরা চাই সব কিছুর দাম সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রনের মধ্যে থাকুক। হরতালে আমাদের যদি সাময়িকভাবে ভোগান্তিও হয় তাও চাই দাম যেন কমে যাক। এতেই শান্তি আমাদের।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিচ্ছেন। যদিও অনেকেই কাজে নেমেছেন। কর্মজীবী মানুষকে কাজে যেতে হচ্ছে। অনেক বাধ্যবাধকতা আছে। মালিকরা বাধ্য করেছেন তািই পরিবহনগুলো নেমেছে। কিন্তু জনসাধারণ আজকের এই হরতালকে সমর্থন করছেন।
গান, বক্তব্য ও প্রচারপত্র বিলিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। অবরোধস্থলে এ লড়াই বাঁচার লড়াই; দাম কমাও, জান বাঁচাওসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী গান করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।