রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন একাডেমিক ভবনের সামনে মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় মাহবুব হাবিব হিমেল নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। নিহত হিমেলের বাড়ি বগুড়ার লতিফপুর গ্রামে।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় নির্মাণসামগ্রী বহন করা ট্রাকটি তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাহবুব হাবিব চারুকলা অনুষদের ২০১৬-১৭ বর্ষের ছাত্র। দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা পাঁচটি ট্রাকে আগুন দিয়েছেন। আহত রায়হান প্রমাণিককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রায়হান সিরামিক ও ভাস্কর্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি ট্রাক ও নির্মাণাধীন ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুরও চালান।
এক পর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ছয় দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নিহতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতের বোনকে চাকরি দিতে হবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাল্টাতে হবে, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং হিমেল নিহতের ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিচার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নিহতের লাশ সামনে নিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য দাবিগুলোর বিষয়ে কথা বলার জন্য আজ বিকেল ৪টায় শিক্ষার্থীরা সাবাস বাংলাদেশ মাঠে উপাচার্যের সঙ্গে আলাপে বসবেন।
রাত পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো লিখিতভাবে গ্রহণ করে উপাচার্য তার বাসভবনে প্রবেশ করেন। পরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দাবি আদায়ের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।