আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সচিবালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। স্বশরীরে না এসে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান।
মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২টায় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। তিনি নিজে সচিবালয়ে আসেননি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। সোমবার অডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঢাকা ছাড়েন মুরাদ।
জানা গেছে, পত্রত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পৌঁছায় প্রথমে। এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। অথবা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করা মাত্রই ক্যাবিনেট থেকে মুরাদ হাসানের পদত্যাগ কার্যকর হবে। সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘প্রধানমন্ত্রী যে কোনো সময় কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিতে অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং উক্ত মন্ত্রী অনুরূপ অনুরোধ পালনে অসমর্থ হইলে তিনি রাষ্ট্রপতিকে উক্ত মন্ত্রীর নিয়োগের অবসান ঘটাইবার পরামর্শ দান করিতে পারিবেন।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।
এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।
এরই মধ্যে ডা. মুরাদ হাসানের আপত্তিকর বক্তব্য ও অডিও সরাতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আপত্তিকর বক্তব্য ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সব ভার্চুয়াল প্লাটফরম থেকে অডিও-ভিডিও সরাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আগামীকালের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। এবং মুরাদ হাসানের অশ্লীল অডিও-ভিডিও অপসারণ করতে আদালতের দ্বারস্থ হন ব্যারিস্টার সুমন।
এ সময়ে ব্যারিস্টার সুমন আদালতে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিওগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ না করলে অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা এই ধরনের গালাগালি এবং অশ্লীল কথাবার্তা শুনে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিও দ্রুত সরাতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।