নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলে আত্মহত্যা করবে বলে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনপত্র দিয়েছে এক ছাত্র। আজ রবিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের শিক্ষার্থী তানভীন ইসলাম জেলা প্রশাসকের কাছে এ আবেদন করেন।
আবেদনপত্রে তিনি নানা বিষয়ে অভিযোগ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমি গিয়াস উদ্দীন ইসলামিক মডেল কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র (রােল নং-২১১৬২)। আমি করোনাকালীন সময়ে অসুস্থ থাকায় দীর্ঘ দিন যাবৎ অনলাইন ক্লাস করতে পারিনি। এ বিষয়ে আমার বাবা আমার পরীক্ষার জন্য অনুরোধ করার জন্য ডাক্তারি কাগজপত্র নিয়ে কলেজে যাওয়ার পর আমার বাবাকে অপমান করে কলেজের অধ্যক্ষ।’
তবে অনলাইন ক্লাস না করলেও আমি প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়েছি। কিন্তু আমার অনলাইন ক্লাস অনুপস্থিতির কারণে এবং আমার বাবার সাথে তর্কের জেদ ধরে আমার পরীক্ষার ফরম ফিলাপ বাতিল করে দেয় কলেজ অধ্যক্ষ এবং আমাকে কলেজে ডেকে নিয়ে জানায় যে আমি এই বছর আর পরীক্ষা দিতে পারবো না। আমি তখন কলেজ থেকে বের হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।
তখন আমার সাথে আমার পূর্ব পরিচিত মোঃ দ্বীন ইসলাম (নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহ-সম্পাদক) ভাইয়ের দেখা হলে তিনি আমাকে আমার মন খারাপের কথা জিজ্ঞেস করেন। আমি তাকে বিষয়টি বলার পর তিনি আমার হয়ে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করতে গেলে তাকেও অপমান করে বের করে দেয়।
আবেদনপত্রে তিনি আরো জানান, ‘এই বছর যদি আমাকে পরীক্ষার জন্য সুযােগ দেওয়া না হয় তাহলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।’ এজন্য ওই ছাত্র জেলা প্রশাসকের কাছে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে অনুরােধ করেন।
এ বিষয়ে তানভীন ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার একটি বছর নষ্ট করে দিচ্ছে স্যার (অধ্যক্ষ)।
তানভীরকে সহযোগীতা করা দ্বীন ইসলাম বলেন, আমার সাথে অধ্যক্ষ স্যারের কথাবার্তার ভিডিও ফুটেজ শব্দসহ তদন্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে এবং ওই দিন কলেজের প্রকাশিত অপ্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজ তদন্ত করার অনুরোধ করছি। তাহলেই অধ্যক্ষ স্যারের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
ওই ছাত্রের ফরম ফিলাপ কেন করতে দেয়া হলো না জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় যে নির্দেশ দিবে, আমি তাই পালন করবো। তবে তিনি বলেন, ফরম ফিলাপ করানো হবে না এমনটি আমি বলিনি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, আবেদনপত্রটি এখনো আমার হাতে আসেনি। আবেদনপত্র হাতে পেলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
প্রসঙ্গত, গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের এই শিক্ষার্থী ওই স্কুল থেকেই পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।