পৃথিবীর কক্ষপথের দিকে এগিয়ে আসছে একটি গ্রহাণু। আর তার পথ পরিবর্তন করার জন্য রকেট ছোড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন চীনের গবেষকেরা। চীনের ন্যাশনাল স্পেস সায়েন্স সেন্টারের বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ওই গ্রহাণু সরিয়ে দিতে চাইলে চীনের তৈরি ২৩টি লং মার্চ ৫ রকেট ছুড়তে হবে।
‘বেনু’ নামের একটি গ্রহাণুতে রয়েছে গবেষকদের চোখ। গ্রহাণুটির ওজন প্রায় ৭ দশমিক ৮ কোটি টন। এটি আগামী ১৫০ বছরে পৃথিবীর কক্ষপথের ৭৫ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে আসবে। শুনতে উদ্বেগজনক মনে না হলেও গবেষকেরা এটা নিয়ে শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। কারণ, বেনু যে পাথরে তৈরি, তা পৃথিবীতে আঘাত করলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীকে ২ হাজার ৭০০ বারের মধ্যে ১ বার বেনু আঘাত করবে। তবে এটা আঘাত হানলে এতটাই ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে যে সেই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। জ্যোতির্বিজ্ঞান জার্নাল ইকারাসে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে লং মার্চ ৫ রকেট দিয়ে গ্রহাণুর পথ পরিবর্তন করার প্রস্তাবটি এসেছে। অবশ্য এমন গবেষণাপত্র এটাই প্রথম নয়।
পরীক্ষামূলকভাবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার দুটি গ্রহাণুর কক্ষপথ বদলাতে চলতি বছরের কোনো একসময় স্বয়ংক্রিয় নভোযান পাঠানোর কথা রয়েছে। এমনকি পৃথিবীর কাছাকাছি এলে বেনু গ্রহাণুর জন্যও সম্ভাব্য সমাধানও যুক্তরাষ্ট্র ভেবে রেখেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী এর প্রস্তুতি নিতে অন্তত ২৫ বছর সময় লাগবে আর খরচও বেশি। অন্যদিকে চীনের প্রস্তুতিপর্বের জন্য বছর দশেকের কথা বলা হচ্ছে।
পারমাণবিক অস্ত্রের সাহায্যেও গ্রহাণুগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কোনো কোনো বিজ্ঞানী প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তাতে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, গ্রহাণু ভেঙে দিলে তার ছোট ছোট কণাগুলোও পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। এর চেয়ে বরং অনেকগুলো রকেট ছোড়াই বেশি যুক্তিযুক্ত। বেনুর নমুনা সংগ্রহের জন্য নাসা এরই মধ্যে নভোযান পাঠিয়েছে। অসিরিস-রেক্স নামের মহাকাশযানটির ২০২৩ সালে পৃথিবীতে ফেরার কথা রয়েছে।