প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ যে কুরবানি দিয়ে থাকেন, এর প্রচলন এসেছে হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম থেকে। আল্লাহ্ তায়ালা হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম-কে তার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে কুরবানির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি (হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) সেই হুকুম পালনে সফল হন।
মুসলিম মিল্লাতের পিতা ইবরাহিম (আ.) এর কুরবানির পর থেকে উম্মতে মুসলিমাহ আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে তাঁরই নির্দেশে কুরবানির বিধান পালন করে আসছে। এ নির্দেশের বর্ণনা কুরআনেও সুস্পষ্টভাবে উঠে এসেছে-
فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعۡیَ قَالَ یٰبُنَیَّ اِنِّیۡۤ اَرٰی فِی الۡمَنَامِ اَنِّیۡۤ اَذۡبَحُکَ فَانۡظُرۡ مَاذَا تَرٰی ؕ قَالَ یٰۤاَبَتِ افۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُ ۫ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ مِن الصّٰبِرِیۡنَ
‘অতঃপর যখন সে তার সাথে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন সে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, অতএব দেখ তোমার কী অভিমত?; সে বলল, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আমাকে ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ (সূরা আস-সাফফাত : আয়াত ১০২)
فَلَمَّاۤ اَسۡلَمَا وَ تَلَّهٗ لِلۡجَبِیۡنِ
‘অতঃপর বাবা-ছেলে উভয়েই যখন আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম) তাকে জবেহ করার জন্য তাকে কাত করে শুইয়ে দিলেন।’ (সূরা আস-সাফফাত : আয়াত ১০৩)
قَدۡ صَدَّقۡتَ الرُّءۡیَا ۚ اِنَّا کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ – وَ نَادَیۡنٰهُ اَنۡ یّٰۤاِبۡرٰهِیۡمُ
‘তখন আমি ডেকে বললাম, ‘হে ইবরাহিম! তুমি তো স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালে। নিশ্চয়ই আমি এইভাবে সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।’ (সূরা আস-সাফফাত : আয়াত ১০৪-১০৫)
اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الۡبَلٰٓـؤُا الۡمُبِیۡنُ – وَ فَدَیۡنٰهُ بِذِبۡحٍ عَظِیۡمٍ
‘নিশ্চয়ই এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমি তার (সন্তান কুরবানির) পরিবর্তে জবেহযোগ্য এক মহান জন্তু দিয়ে (কুরবানি করিয়ে) তাকে (সন্তানকে) মুক্ত করে নিলাম।’ (সূরা আস-সাফফাত : আয়াত ১০৬-১০৭)
وَ تَرَکۡنَا عَلَیۡهِ فِی الۡاٰخِرِیۡنَ
আর এ (কুরবানির) বিষয়টি পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম। (সূরা আস-সাফফাত : আয়াত ১০৮)
সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ মহান! যিনি তার বন্ধু হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে প্রিয় সন্তান কুরবানির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি (হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম)ও তাঁর (আল্লাহর) নির্দেশ পালনে নিজ সন্তানকে জবেহ করার জন্য শুইয়ে দিয়েছেন। আর তিনি এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারপর থেকেই মুসলিম উম্মাহ কুরবানির এ বিধান পালন করে আসছেন।