প্রখ্যাত বুজুর্গ হযরত শাক্বীক বলেন, একবার আমি মক্কা শরীফ যাওয়ার পথে এক অর্ধাঙ্গ বুজুর্গ বালকের সাক্ষাত পাইলাম। সে অতি কষ্টে হামাগুড়ি দিয়া পথ অতিক্রম করিতেছিলেন। আমি তার নিকটে গিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম-
“বেটা! তুমি কোথা হইতে আসিতেছ?” সে বলিল-
“সমরকন্দ হইতে।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম-
“তুমি কোথায় যাইবে?” বালক বলিল-
“ইনশাআল্লাহ্ আমি বাইতুল্লাহ্ শরীফ যাইব।” আমি পুনরা্য় জিজ্ঞাসা করিলাম-
“সমরকন্দ হইতে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করিয়া এখানে আসিতে তোমার কত সময় ব্যয় হইয়াছে?” সে বলিল-
“দশ বৎসরের কিছু বেশী।” আমি অবাক হইয়া তাহার দিকে তাকাইয়া রহিলাম। বালক আমার মনোভাব টের পাইয়া বলিল-
“তুমি আমার দিকে এমনভাবে তাকাইয়া আছ কেন? আমি বলিলাম-
তুমি এই অসুস্থ শরীরে যেমন করিয়া দীর্ঘ দশ বৎসর যাবৎ সফর করিতেছ, আমি তাহাই ভাবিতেছি।” এইবার সে বলিল-
“হে শাক্বীক! এই দীর্ঘ সফরের তুলনায় আমার শারীরিক সামর্থ্য নেহায়েতই কম বটে,কিন্তু আমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর জন্য তো ইহা কোন মুশকিল ব্যাপার নহে। বাইতুল্লাহ শরীফের প্রতি আমার আগ্রহ ও মোহাব্বত আমাকে এই দীর্ঘ সফরের কষ্টের কথা ভুলাইয়া দিয়াছে।” অতঃপর সে পুনরায় আমাকে ডাকিয়া বলিল-
“হে শাক্বীক! আল্লাহ পাক যদি তাহার কোন দুর্বল বান্দাকে দীর্ঘ পথের সফর করাইয়া তাঁহার ঘর জেয়ারত করার সুযোগ দেন, তবে ইহাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই।”