ছোট একটি দোকান দিয়ে সংসার চলছিল শওকত আলীর। করোনার কারণে সেই ব্যবসাটিও বন্ধ হয়ে যায়। তাই সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়ে তিনি কয়েক মাস ধরে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ার করছিলেন।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শওকত আলী মোটরসাইকেল নিয়ে বাড্ডা লিংক রোডে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তাঁর কাগজপত্র নিয়ে যান। মামলা না দিতে অনুরোধ করে পুলিশের কাছে গাড়ির কাগজপত্র ফেরত চান তিনি। কাগজপত্র ফেরত না পেয়ে হতাশ হয়ে নিজেই মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
পুলিশের দাবি, কাগজপত্র নিলেও শওকত আলীর মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেয়নি পুলিশ। মামলা দেওয়ার আগেই তিনি গাড়িতে আগুন দিয়েছেন।
গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘অফিস আওয়ারে গুলশানের লিংক রোডে যানজট সৃষ্টি হয়। মোটরসাইকেলগুলো রাস্তার পাশে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে রাখে, এতে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। তাই দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র নেন। এসময় কয়েকজনকে মামলা দেওয়া হলেও শওকত আলীর মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেওয়া হয়নি। মামলা দেওয়ার আগেই তিনি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।’
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শওকত আলীকে থানায় এনে ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। তিনি আমাকে জানিয়েছে, এর আগেও তাঁর গাড়ির বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়েছে। আজ যখন পুলিশ তাঁর কাগজপত্র নিয়েছে, তখন তিনি হতাশা, আবেগ ও বিরক্ত হয়ে গাড়িতে আগুন দিয়েছেন।’
এদিকে, শওকত আলীর মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলেছেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর নিচে মো. মিজান নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, বাস্তবতার করুণ চিত্র। মুকিমুল আহসান হিমেল নামের আরেকজন লিখেছেন, কতটা অসহায় হলে মানুষ এটা করতে পারে। শওকত আলী থানা হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।