অনেক হাদিসে সূরা ফাতিহার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ফজিলত তুলে ধরা হলো: উবাই ইবনু কা’ব (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তা’আলা তাওরাত ও ইনজিলে উম্মুল কুরআনের মত কিছু নাজিল করেননি। এটিকেই বলা হয়, ‘আস-সাবউল মাছানী’ (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত), যাকে বণ্টন করা হয়েছে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে। আর আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চাইবে’। (নাসায়ী শরীফ : ৩১৯)।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা সূরা ফাতিহা পড়ো। কোন বান্দা যখন বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন’ তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। যখন বলে ‘আর-রহমা-নির রহীম’ তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা যখন বলে ‘মালিকি ইয়াউমিদ্দী’। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। বান্দা যখন বলে, ‘ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া ইয়্যা কানাস্তাইন’। আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। বান্দা যখন বলে, ‘ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম..(শেষ পর্যন্ত)’। আল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। (মুসলিম শরীফ : ৩৯৫)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, একদা রাসূল (সা.)-এর কাছে হযরত জিবরাঈল (আ.) উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ জিবরাঈল (আ.) ওপর দিকে এক শব্দ শুনতে পেলেন এবং চক্ষু আকাশের দিকে করে বললেন, এটি হলো আকাশের একটি দরজা যা এর আগে কোনদিন খোলা হয়নি। সে দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হলেন এবং রাসূল (সা.) এর কাছে এসে বললেন, ‘আপনি দু’টি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন। যা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আপনাকে প্রদান করা হয়েছে। তা আপনার পূর্বে কোন নবীকে প্রদান করা হয়নি। সেটি হলো সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষ দু’আয়াত। (মুসলিম শরীফ : ৮০৬)।
‘সূরাতুল ফাতিহা’ হলো সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম। তারপরও সূরা ফাতিহার স্থান, মর্যাদা, বিষয়বস্তু, প্রতিপাদ্য বিষয় ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে এই সূরার বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে এবং প্রত্যেক নামের সাথেই সূরাটির সামঞ্জস্য বিদ্যমান আছে। সূরার ফাতিহার ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে সূরা ফাতিহার প্রতি আমল করার এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন!