মানুষের বসবাসের জন্য পৃথিবীর বিকল্প গ্রহের সন্ধানে একের পর এক গবেষণা ও অভিযান পরিচালনা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই সন্ধানের তালিকায় প্রথমেই যে গ্রহটিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা হলো মঙ্গলগ্রহ। যাকে লাল গ্রহও বলা হয়ে থাকে।
বহু শতাব্দি ধরে মানবজাতির কৌতুহল জাগাচ্ছে মঙ্গল গ্রহ। প্রথমবারের মতো পৃথিবীবাসী মঙ্গলগ্রহের অভ্যন্তরে খুব ভালোভাবে নজর দিতে পেরেছে। নাসার মহাকাশযান ইনসাইট ল্যান্ডার মঙ্গলের উপরিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে এটা সম্ভব হয়েছে। রাতের আকাশের লাল এই বিন্দুটি অনেক সংস্কৃতির কল্পনায় নানা রঙ চড়িয়েছে।
নাসার মহাকাশযান ইনসাইট ল্যান্ডার মঙ্গলের উপরিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। গ্রহটির একটি তরল কেন্দ্রস্থল, একটি শক্ত আবরণী এবং পৃথিবীর মতো তবে কিছুটা আলাদা ভূত্বক রয়েছে। এটি সাত শতাধিক ‘মার্সকোয়েক’ (ভূমিকম্প) রেকর্ড করেছে। এগুলোর মধ্যে ৩৫টি এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে, এগুলো নিয়ে আরও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলের অভ্যন্তর দিয়ে এই তরঙ্গের মাত্রা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা লাল গ্রহের অভ্যন্তর সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছেন। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন যে, মঙ্গলের ভূত্বক ২৪ থেকে ৭২ কিলোমিটার পুরু এবং এর কমপক্ষে দুটি স্তর রয়েছে। এর ম্যান্টলটি একক স্তরের শিলা দিয়ে গঠিত এবং ৪০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার পুরু। এর পরে আসছে কেন্দ্রস্থল। এটির স্তর অনেক বড়, যার ব্যাসার্ধ এক হাজার ৮৩০ কিলোমিটার। কেন্দ্রস্থলটি তরল।
এদিকে নাসার রোবটযান কিউরিসিটি রোভার মঙ্গল গ্রহের ‘গেল ক্রেটার’ নামক একটি বিশাল গহ্বরে ২০১২ সাল থেকে কাজ করছে। এই রোভারের একটি যন্ত্রাংশ ওই এলাকার আশেপাশে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ পরিমাপের কাজ করছে। এটি ৬ বার মিথেনের সন্ধান পেয়েছে এবং উৎসও শনাক্ত করা গেছে।
বিজ্ঞানী মহলে নতুন এই আবিষ্কার তুমুল শোরগোল ফেলেছে। কারণ পৃথিবীতে প্রায় সব মিথেনেরই জৈবিক উৎস রয়েছে। তবে ভূমিকম্পের বিষয়টিও ভাবনায় ফেলেছে বিজ্ঞানীদের।