মা-বাবা, পরিবারের সদস্যরা ঘরের বাহিরে যায়। তাদের কারোনা হয় না। শুধু আমি স্কুলে গেলেই দোষ। স্কুলে গেলেই আমার করোনা হবে? মনের গহিন থেকে এমনই কথা বের হয় দশম শ্রেণির ছাত্র মিহির হোসেনের মুখ থেকে। তিনি বলেন, আমি স্কুলে যেতে চাই। পড়তে চাই। ঘরে আবদ্ধ না থেকে স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে চাই’।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন নতুন কুঁড়ি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মিহির হোসেন। গতকাল সোমবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে আয়োজিত এই মানববন্ধন করা হয়। তিন কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধনে বাসন থানা এলাকার ১৮২টি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এর আগে গত ২০২০ ও ২০২১ সনে ১৮ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। এতে সারা দেশে বাল্যবিয়ের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়েছে। অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার জন্যে শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দিতে হয়েছে।
শিক্ষকদের সঙ্গে কিংবা লেখাপড়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার বদলে শিক্ষার্থীরা ভার্চুয়াল মাদক পাবজি গেমস ও ফ্রি ফায়ার গেমসসহ ইন্টারনেটের ক্ষতিকর এপসগুলোতে আসক্ত হচ্ছে। শিশু কিশোরদের মধ্যে মা-বাবা পরিবার পরিজনদের প্রতি মমত্ববোধের পরিবর্তে অসহিষ্ণু ও উগ্র আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাস্তব যোগাযোগ বন্ধ থাকার কারণে তৈরি হচ্ছে মেধাশূন্য প্রজন্ম।
কিশোর গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। তাতে ভয়ংকর অপরাধী হিসেবে বেড়ে উঠছে বিপুলসংখ্যক কিশোর শিক্ষার্থী। শিক্ষকরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বক্তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অতিসত্ত্বর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্যে দাবি জানান।