লকডাউনে কোনো কাজ না থাকায় সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। সন্তানসহ নিজেদের ৩ বেলা খাবার জোটে না। আর তাই নিজের কন্যা শিশুকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন হতদরিদ্র এক পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পূর্বকান্দি গ্রামে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে এখন অনেক জায়গায় অনেকেরই কাজকর্ম হারানোর কথা শোনা যায়। তাদেরই একজন শিকার হয়েছেন শিশুটির বাবা মো. মোসলেম সরদার। কাজ না থাকায় অভাবের তাড়নায় গত ২১ জুলাই ৩ মাসের শিশু বিক্রি করেন মা-বাবা।
শিশুটির মা আলোমতি বলেন, আমি আমার সন্তানকে বিক্রি করিনি পালতে দিয়েছি। কিন্তু পরে সে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার স্বামী একজন জেলে। গত কয়েক মাস নদীতে কোনো মাছ ধরতে পারছে না। এই মহামারীর মধ্যে লকডাউনের কারণে বেরও হতে পারছে না, অন্য কোন কাজও করতে পারছে না। এ জন্য সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
আজ আমরা আমাদের দুধের শিশুকে বিক্রি করেছি শুনে সবাই দেখতে এসেছে। কিন্তু এতো দিন কোথায় ছিল এতো লোক, কেথায় ছিল এত মানবদরদীরা। কই কাউকে তো এর আগে কখনো দেখিনি। কোন চেয়ারম্যান, মেম্বার এসে তো আমাদের খোঁজ নেয়নি। তিনটি শিশু বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে কতো কেঁদেছি কেউ তো একবারও তাকিয়ে দেখলো না। কোন বাবা-মা-ই কম কষ্টে তাদের সন্তান বিক্রি করে না। আমরা ক্ষুধার তাড়নায় দুধের শিশুটিকে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে জানত চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মো. তৌফিকুর রহমান সিকদার জানান, আমি শুনেছি ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটির বাবা-মা শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছেন। শিশুটিকে তার বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বকুল চন্দ্র বলেন, লোকমুখে ঘটনা শুনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে শিশুটি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বলা হয়েছে।