গতকাল শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বিকেল বেলা হাতিরঝিলে ছিল হাজারো মানুষের ঢল। দুপুরের পর পর মানুষের আনাগোনা কম থাকলেও বিকেলের পর থেকে সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। লকডাউনে ঘরবন্দি থেকে দীর্ঘদিন পর হাতিরঝিলের খোলা হাওয়ায় ঘুরতে এসে যেন আগের জীবনে ফিরে পেয়েছে রাজধানীবাসী। পাশাপাশি বহু মানুষকে বসে, হাঁটতে হাঁটতে কিংবা খাবার খেতে খেতে গল্প করতে দেখা যায়। পিতা-মাতা-সন্তান, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন কিংবা সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে একটু সময় কাটাতে এসেছেন তাঁরা।
কয়েকজন বিক্রেতা জানিয়েছে, অনেক দিন পরে হাতিরঝিলে এত মানুষের আনাগোনার কারণে ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান এবং ফুল বিক্রেতাদের বেচা বিক্রি বেড়েছে বলে। ফুল বিক্রেতা রাবেয়া বলেন, ‘ম্যালা দিন পর আইজক্যা ২০০ ট্যাকার ফুল ব্যাচছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত মনে অয় ৩০০ টাকার ফুল ব্যাচতে পারমু।’
ডাব বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, ‘লকডাইনের ভিতরে তেমন কোনো বেচাবিকরি ছিল না। আওয়ার মন চাইছিলো তয় মানুষ না থাকলে কিনব ক্যাডায়। অহন মানুষ বাড়ছে, তাই বিকরিও ভালো হইতাছে।’ কপাল খুলেছে ভিক্ষুকদেরও। বেড়েছে ভিক্ষুকের সংখ্যাও। বেশ কিছু দর্শনার্থীর ভাষ্যে, ভিক্ষুকের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ তারা। তবে সেটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কুলসুম নামের এক শিশু ভিক্ষুকের। সে বলেন, ‘মানুষ বেশি থাকলে ভিক্ষা বেশি ওডে। সবাই না দিলেও লস হয় না।’
দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো না থাকায় লকডাউনের নিয়ম মানতে গিয়ে এককথায় ঘরবন্দি ছিল মানুষ। এতে দিনের পর দিন স্বাধীনভাবে না চলার কারণে সকলের ভিতর একঘেয়েমি এসেছে। আর তাই এই একঘেয়েমি দূর করার জন্য লকডাউন শেষ হওয়ার সাথে সাথেই খোলা হাওয়ায় ঘুরতে বেরিয়েছে রাজধানীবাসী। সকলের মাঝে এক প্রকার শান্তি বিরাজ করছে। তবে অবশ্যই সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান করা হয়েছে।