1. faysalislam405@gmail.com : ফয়সাল ইসলাম : ফয়সাল ইসলাম
  2. tajul.islam.jalaly@gmail.com : তাজুল ইসলাম জালালি : তাজুল ইসলাম জালালি
  3. marufshakhawat549@gmail.com : মারুফ হোসেন : মারুফ হোসেন
  4. saddam.samad.24@gmail.com : সাদ্দাম হোসাইন : সাদ্দাম হোসাইন
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৮ অপরাহ্ন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া

সাদ্দাম হোসাইন
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১
  • ২৬৪ বার পড়া হয়েছে
মোঃ সাদ্দাম হোসাইন
মোঃ সাদ্দাম হোসাইন

২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় এসএসসি (SSC) পরীক্ষা। প্রায় এক মাসের বেশি সময় লাগিয়ে ৫ই মার্চ পর্যন্ত এই পরীক্ষা চলতে থাকে। তারপর পরীক্ষা শেষ হওয়ায় আনন্দের জোয়ারে মেতে ওঠে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ শিক্ষার্থী। কিন্তু তখনও তারা জানত না যে, এই আনন্দ বিলিন হয়ে তাদের জন্য এক দুঃখের সময় অপেক্ষা করছে। দিন কয়েক যেতে না যেতেই ৮ই মার্চ বাংলাদেশে করোনার হানা শুরু হয়। করোনার আক্রমণ বাড়তে থাকায় বাংলাদেশ সরকার সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। তার মধ্যে বাদ যায়নি এদেশের শিক্ষার্থীদের প্রিয় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

করোনা আঘাত হানার পর সর্ব প্রথম ১৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই যে বন্ধ হলো তারপর খুলবে খুলবে করে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে আজ ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত পার হয়ে গেলো প্রায় দেড় বছর। সেদিন থেকে এই দেড়টি বছর খুলেনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা। বিদ্যালয়ে যায়নি কোনো শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীর ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে। অনেক হত দরিদ্র পরিবার তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আর এটা হচ্ছে সম্পূর্ণ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। এতে শেষ হয়ে যায় ওই শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন। শেষ হয়ে যায় তার সকল আশা, আকাঙ্খা, স্বপ্নগুলো। বলা যায় তার জীবনটাই শেষ হয়ে গেছে। বিবাহের সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ায় সংসার জীবনে ব্যস্ততার কারণে হয়তো আর ফেরা হবে না তার প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলেও তারাও যে শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তা চোখে পড়ার মতো। করোনার কারণে একের পর এক লকডাউনে ভুগতে হয়েছে এদেশের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারদের। যখন লকডাউন নামে এক বোঝা মাথায় চেপে বসে, তখন সংসার চালাতে না পারা মা-বাবার পাশে দাঁড়াতে হয় সন্তানকে। তখন সংসারের হাল ধরতে গিয়ে কাজ করার জন্য বেরিয়ে পড়ে। আর এই সংকটময় সময়ে ভালো কোনো কাজ না পাওয়ায় রিক্সা চালানো, দিন মজুরি করাই হয়ে যায় তাদের একমাত্র পেশা। এক সময় তারা এমন এক জায়গায় গিয়ে ঠেকবে, যেখানে ইচ্ছা থাকলেও হয়তো দরিদ্র পরিবারের কথা ভেবে বেছে নেওয়া পেশা ছেড়ে আর প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে না। শেষ হয়ে যাবে তার ডাক্তার, জর্জ, ব্যারিস্টার বা বড় কোনো অফিসার হওয়ার স্বপ্ন।

অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা ঘরে বেকার হয়ে বসে থাকার কারণে পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে যায়। আজ এমন এক পর্যায় এসেছে যেখানে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানের কাছে পড়ালেখা আর পরিবার দেয়াল হয়ে দাড়িয়েছে। আমি নিজেও একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আজ আমি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি যে, ভেবে কুল পাচ্ছিনা আমি কি করবো? পড়ালেখা নাকি নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে এই বয়সে অসহায় পরিবারের জন্য কর্ম জীবনে প্রবেশ করা। এই চিন্তাগুলো যখন পিছু ধাওয়া করে, তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়।

আজ যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এতোদিন বন্ধ না থাকতো তাহলে হয়তো কিছু শিক্ষার্থীদের জীবন এমন হতো না। বাংলাদেশ সরকার আমাদের শিক্ষার্থীদের কথা ভেবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না। তারা আমাদের খুব ভালোবাসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর যদি করোনার আক্রমণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারো জীবন শেষ হয়ে যায় এই ভেবে। তার এই সিন্ধান্তকে আমরা সবাই সালাম ও শ্রদ্ধা জানাই।

কিন্তু আমরা কিছু শিক্ষার্থীরা আছি যারা মন খুলে এই কথা বলতে পারছিনা যে, আমরাতো প্রতি ক্ষণে ক্ষণে মৃত্যু বরণ করছি। পরিবার থেকে, সমাজের কাছ থেকে আমরা যেই কথার ছোবলে দংশন হচ্ছি তা করোনার বিষের চেয়ে কোনো অংশে কম বলে মনে হয় না। করোনায় আক্রান্ত হলে হয়তো ১৪ দিনের মধ্যে মারা যেতাম। কিন্তু আমরাতো দিনের পর দিন মারা যাচ্ছি। অথবা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে, চিকিৎসা নিয়ে হয়তো সুস্থ হয়ে যেতাম। কিন্তু আমরা এখন যেই রোগে ভুগছি সেই রোগ থেকে সুস্থ করবে কারা বা সুস্থ করে তুললেও সেটা কবে প্রশ্ন রইলো এদেশের বিশিষ্ট জনদের বিবেকের কাছে।

মোঃ সাদ্দাম হোসাইন

বিজ্ঞাপন




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও

ফেসবুকে হক কথা

Share via
Copy link
© ২০২৩- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । হক কথা ২৪.নেট
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )
Share via
Copy link