ট্রাকচাপায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল সংগ্রামী জীবন নিয়ে বেঁচে ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে হিমেল নাটোরে মায়ের সাথে তাঁর নানার বাড়ি থাকতেন। তাঁর দাদার বাড়ির কেউই হিমেলদের তেমন সহযোগিতা করেনি। নানা-মামাদের সহযোগিতায় তিনি পড়াশোনার খরচ চালাতেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও তিনি নানাবাড়ির সহযোগিতা নিয়ে চলতেন। অন্যদিকে নিজে টিউশনি করে নিজের জন্য খরচ করতেন ও মায়ের জন্য নানাবাড়িতে কিছু টাকা পাঠাতেন। এ বিষয়গুলো নিয়ে হিমেলের খুব কষ্টে দিন কাটতো। হিমেলের সহপাঠী, নানাবাড়ি ও দাদাবাড়ি এলাকা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মেধাবী হিমেলের এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবারের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠীরা।
বগুড়ার শেরপুর শহরের উলিপুরপাড়ায় হিমেলের দাদার বাড়ি। বাবা আহসান হাবিব হেলাল ছিলেন পৌরসভায় একজন কর্মকর্তা। চার বছর আগে তার বাবা মারা যান। স্থানীয় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে হিমেলের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সেখানে তিনি নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। বাবার মৃত্যুর পর মা মনিরা আক্তারের সঙ্গে নানার বাড়ি নাটোরে যান। সেখানে তিনি নাটোর জিলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর নাটোর সিরাজউদ্দৌলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। একমাত্র সন্তান হিমেলকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন মা মনিরা আক্তার।
ছেলের লাশ দেখ মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। হিমেলের বড় মামা খন্দকার আরিফুজ্জামান বাবু বলেন, ২০১৭ সালে হিমেলের বাবা তাঁর মা মনিরাকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় নিহত হন। মনিরা আহত হন। তখন থেকেই মনিরা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
অন্যদিকে শোকে স্তব্ধ হিমেলদের বাড়ি ও আশপাশের এলাকা। তাঁর মৃত্যুর খবরে স্বজনদের পাশাপাশি সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধবসহ পাড়া-মহল্লার লোকজন বাড়িতে আসতে শুরু করেন। বাকরুদ্ধ হিমেলের চাচি শারমিন আক্তার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আমরা এই খবর পাই। এর পরই তার চাচা রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হন। সে খুবই নম্র ও ভদ্র ছিল।