● মঙ্গলবার, এপ্রিল 23, 2024 | 10:14 অপরাহ্ন

আশুরাকে জানি

আশুরাকে জানি

আবিদা, এই আবিদা। বাড়ি আছিস?
কে….? আমি রে।সোনালী। 
বাইরে বেরিয়ে এলো আবিদা।
আসসালামু আলাইকুম।
ওয়া আলাইকুমুস সালাম। 
আয়, ভেতরে আয়, বস।
নারে, বেশি বসতে পারবো না। তুই এ্যাসাইনমেন্ট করেছিস? সময় তো শেষ হয়ে এলো।
নারে, এখনও শেষ করতে পারিনি। তুই? 
আমিও না। এজন্যই তোর সাহায্য চাইতে এলাম।
তাইতো বলি!  গরীবের দুয়ারে হাতির পা কেন হঠাৎ 
কি যে বলিস না!
আচ্ছা, তুই একটু বস। আমি আসছি। 
নারে বসতে পারবো না। দেরি হয়ে যাবে।
এত তাড়া কিসের তোর! 
আজকে আশুরা জানিস তো?
হুম জানি।
প্রতিবছর এই দিনে আামাদের উত্তর পাড়ায় আশুরা উদযাপন করা হয়, জানিস?
কি রকম? 
তুই জানিস না?
না তো! 
১০ই মহররম হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় নাতি হযরত হাসান (রাঃ) এবং হযরত হোসাইন (রাঃ) কারবালা ময়দানে শহীদ হন। তাই এই দিনে তাদের সম্মানার্থে তাজিয়া মিছিল এবং তারপর নিজেদের রক্ত ঝড়িয়ে হায় হাসান হায় হোসাইন বলে বিলাপ করা হয়।
শোন, ইসলামে এসবের কোনো ভিত্তি নেই। কারবালার বহু আগে থেকেই আশুরা ছিল। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যেদিন হিজরত করে মদীনায় পৌছান, সেদিন ছিল আশুরা। অর্থাৎ ১০ই মহররম। সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন মদীনা বাসী রোজা রেখেছে। তিনি প্রশ্ন করলেন তোমরা কিসের রোজা রেখেছ? তারা বললো- আমরা আশুরার রোজা রেখেছি।
এই দিনে হযরত মূসা (আঃ) কে আল্লাহ পাক ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন ও তার অনুসারীদের লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। 
মূসা (আঃ) এর জীবদ্দশায় তিনি প্রতিবছর এই দিনে রোজা রাখতেন। 
তাই এই দিনটির সম্মানার্থে প্রতি বছর এই দিনে আমরা রোজা রাখি।
রাসূল (সাঃ) বলেন, আমরা মূসা (আঃ)-কে ভালোবাসার দিক থেকে অগ্রগামী। তাই তোমরা ইহুদিদের মতো শুধু ১০ই মহররম নয়, তার সাথে মিলিয়ে ৯ অথবা ১১ই তারিখে রোজা রাখ। রাসূল (সাঃ) আরও বলেন, আমি আশা করি আশুরার দিন রোজা রাখলে আল্লাহ তা‘আলা তার বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। 
আচ্ছা, তুই রোজা রেখেছিস?
না তো! আমরা তো শুধু শোক পালন করি।
যেটা করার কথা সেটা করিস না অথচ গর্হিত কাজ ঠিকই করিস!
গর্হিত কেন হবে? রাসূল (সাঃ) এর প্রিয় নাতি শহীদ হয়েছেন। রক্ত ঝড়েছে। তাই আমাদের এ প্রজন্মের ভাইয়েরা তাদের শরীর থেকে রক্ত ঝড়ায় আর আমরা তাতে উৎসাহ দেই। এতে তো দোষের কিছু দেখছি না।
আচ্ছা, ১৫ই আগষ্ট কি?
জাতীয় শোক দিবস। 
কেন পালন করা হয়?
কারণ এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য শহীদ হয়েছেন। 
তাহলে আমাদেরও তো ১৫ই আগষ্টে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শহীদ হওয়া উচিত। তাহলে আমরা সেটা করিনা কেন? 
এটা কিভাবে সম্ভব! (বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে বললো সোনালী)। 
দেখ, এটা যেমন সম্ভব না তেমনি রক্তপাত ঘটানোর কোন ভিত্তি নেই।
আশুরার দিন শোক পালন করতে হবে সেটা থাকবে অন্তরে। বাহিরে প্রকাশ করার এই যে রীতি এটা সাহাবায়ে কেরাম দ্বারা প্রমাণিত নয়।
তাই আমাদের উচিত এসব বিষয় পরিত্যাগ করে কুরআন সুন্নাহর আলোকে আমল করা, নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তাওবা করা। আল্লাহ আমাদের সহীহ্ বুঝ দান করুন, আমিন।
আবিদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটছে সোনালী আর আবিদার বলা কথাগুলো মনে মনে আওড়াচ্ছে। তাহলে কি এতদিন ভুল ছিলাম আমরা!

লেখক পরিচিতি-
নুরজাহান তানিয়া
পাঁচুখার কান্দি, জাজিরা, শরীয়তপুর
মোবাইলঃ 01752771492 

এই সম্পর্কিত আরও

আবুল কালাম
বিস্তারিত...
 আরবে ঈদের তারিখ ঘোষণা
বিস্তারিত...
813788_175
বিস্তারিত...
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
বিস্তারিত...
জান্নাতের ফুল
বিস্তারিত...
কাজী নজরুল ইসলাম
বিস্তারিত...