● সোমবার, এপ্রিল 29, 2024 | 12:58 পূর্বাহ্ন

সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ

ওমানের বৃহত্তম মসজিদের অজানা কিছু কথা

ওমানের রাজধানী মাস্কাটের বাউশার এলাকায় অবস্থিত ‘সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ’। এই মসজিদটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝাড়বাতি ও দ্বিতীয় বৃহত্তম কার্পেটের জন্য প্রসিদ্ধ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্পেট আর ঝাড়বাতির জন্য অনিন্দ্য সুন্দর এই মসজিদের একসময় গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা হাতছাড়া হয়ে যায়।

২০০৭ সাল পর্যন্ত এই মসজিদ বৃহত্তম হিসেবে রেকর্ডের নামে ছিলো। পরে আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদে এর চেয়ে বড় কার্পেট স্থাপন হয়। তাই ‘সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ’ সর্ববৃহৎ কার্পেটের রেকর্ডটি হাতছাড়া করে। আবার ২০১০ সালে কাতারের দোহায় আল হাতমি ভবনের লবিতে সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি বসানোর পর তখন এই ঝাড়বাতির রেকর্ডটিও হাতছাড়া হয়।

১৯৯২ সালে সুলতান কাবুস মসজিদটি বানানোর পরিকল্পনা করা হয়। মসজিদের নান্দনিক নকশা তৈরি করার জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় দেশি-বিদেশি নামকরা নকশাবিদরা অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে প্রায় ৪ লাখ ১৬ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান কার্লিয়ন আলাওই এই কাজের দায়িত্ব পান। মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, জাতীয় জাদুঘর, মজলিশ, রয়েল ওপেরা হাউসের মতো ওমানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো এই কম্পানিই বানিয়েছেন।

সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ

মসজিদটি তৈরি করতে সময় লাগে ছয় বছর চার মাস। স্থপতি ইরাকের মোহাম্মদ সালেহ মাকিয়া এবং লন্ডনের কুড ডিজাইন কম্পানির তত্ত্বাবধানে এটির কাজ হয়। প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক নির্মাণ কাজে অংশ নেন। বিশ্বের নামিদামি সব উপকরণ মনোমুগ্ধকর এই স্থাপত্যে ব্যবহার করা হয়। এর মার্বেল ও মোজাইক পাথর ইতালি, মিসর, ভারত থেকে আনা হয়। ওমানের ৬০ ও ভারতের ২০০ জন কারুশিল্পী অত্যন্ত নৈপুণ্যের সঙ্গে ভাস্কর্য তৈরি করেন। তারা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে গড়ে তোলা নকশার পরতে পরতে ফুটিয়ে তুলেছে সাগর আর মরুভূমির মিশেলে গড়ে ওঠা আবহমান মরু-জীবন। অবশেষে ২০০১ সালে ‘সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ’ উদ্বোধন করা হয়। এটি আধুনিক ইসলামী স্থাপত্যের গৌরবময় নিদর্শন বলা হয়।

মসজিদটির মূল নামাজ ঘরের আয়তন সাড়ে ৫ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি। প্রায় ৭ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মেঝেতে বিছানো রয়েছে ৪ হাজার ৩৪৩ বর্গমিটার আয়তনের ২১ মেট্রিক টন ওজনের বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কার্পেট। বোনা হয়েছে ক্লাসিক্যাল, তাব্রিজ, কাশান এবং ইসাফাহান ঐতিহ্যের নকশায় ১৭০ কোটি সুতার বন্ধনে। নানা রঙের বিন্যাস ২৮টি স্তরে। মসজিদে কারুকাজ করা উঁচু দরজা প্রবেশের সময় মুগ্ধ করে দেয়। গায়ে লতাপাতার মোটিফ ও জ্যামিতিক নকশার ম্যুরাল।

সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ

ছাদের ঠিক মাঝখানে আছে কেন্দ্রীয় গম্বুজ। এর ভেতরে মার্বেল কলাম কাঠামোর মধ্যে খোদাই করা রঙিন গ্লাসের বেশ কিছু ছোট জানালা এবং চীনা মাটির বাসন প্যানেলে অলংকৃত। মেটাল বিটের ওপর ২৪ ক্যারেটের সোনার প্রলেপের এই ঝাড়বাতিও বানাতে সময় লেগেছিল ৪ বছর। এর ওজন সাড়ে ৮ মেট্রিক টনেরও বেশি। উচ্চতা ১৪ মিটার। ৬ লাখ টুকরা অস্ট্রিয়ান স্বরভস্কি ক্রিস্টাল, ১১২২টি হেলোজেন বাল্ব। এটি তৈরি করেছিল জার্মানের ফৌস্টিগ কম্পানি। এটি ছাড়াও আরো ১৬টি ছোট ঝাড়বাতি মসজিদটিকে উজ্জ্বল করে রেখেছে ।

লতা-পাতার মোটিফ ও আলংকারিক নকশার মাঝখানে আল্লাহর নাম ও কোরআনের আয়াতের ক্যালিওগ্রাফি যে কারো মন শীতল করে দিবে। সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদে রাজকীয় পাঁচটি মিনার রয়েছে। এই মিনারগুলো মসজিদের বাইরের সৌন্দর্য আরো বেশি ফুটিয়ে তুলেছে।

এই সম্পর্কিত আরও

আবুল কালাম
বিস্তারিত...
 আরবে ঈদের তারিখ ঘোষণা
বিস্তারিত...
813788_175
বিস্তারিত...
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
বিস্তারিত...
জান্নাতের ফুল
বিস্তারিত...
কাজী নজরুল ইসলাম
বিস্তারিত...