1. faysalislam405@gmail.com : ফয়সাল ইসলাম : ফয়সাল ইসলাম
  2. tajul.islam.jalaly@gmail.com : তাজুল ইসলাম জালালি : তাজুল ইসলাম জালালি
  3. marufshakhawat549@gmail.com : মারুফ হোসেন : মারুফ হোসেন
  4. saddam.samad.24@gmail.com : সাদ্দাম হোসাইন : সাদ্দাম হোসাইন
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন

চিকিৎসা শাস্ত্রে মুসলিম বিজ্ঞানী আল-রাজির অবদান

সাদ্দাম হোসাইন
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১
  • ৪৯৬ বার পড়া হয়েছে
চিকিৎসা শাস্ত্রে আল-রাজি
চিকিৎসা শাস্ত্রে আল-রাজি

মুসলিম ইতিহাসে মনীষী খ্যাতি অর্জন করা ব্যক্তিদের মধ্যে আল-রাজি অন্যতম। তিনি ৮৬৫ সালে ইরানে ‘রায়’ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম হলো ফাখর আদ-দ্বিন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ওমর ইবনে আল-হুসায়েন।

তিনি একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও দার্শনিক।ছোটবেলা থেকেই আল-রাজি প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন। তেহরানে লেখাপড়া শেষ করে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি বাগদাদ শহরে চলে যান। তখন তাঁর বয়স ছিল ২০ বছর। তেহরানে থাকাকালে আল-রাজি রসায়নশাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। বাগদাদে এসে তিনি গ্রিক চিকিৎসাবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। এ সময় আল-রাজি ইরানি চিকিৎসাপ্রণালী ও ভারতীয় আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি পদার্থবিদ্যায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। দর্শনশাস্ত্রের প্রতিও তাঁর কম অনুরাগ ছিল না।

শিক্ষাজীবন শেষ করে আবু বকর আল-রাজি কিছুদিন জুন্দেশাপুর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাটান। এখানে তিনি আলকেমি ও ভেষজতত্ত্বে গভীর গবেষণায় মগ্ন ছিলেন। এ সময় চিকিৎসক হিসেবে তাঁর খ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তখন বাগদাদ শহরে তাঁর সমকক্ষ দ্বিতীয় কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। তিনি অনেক দিন খলিফা আল-মুকতাদিরের প্রধান চিকিৎসক ছিলেন। খলিফার অনুরোধে আল-রাজি জুন্দেশাপুর, রায় ও বাগদাদের সরকারি হাসপাতালের কয়েক বছর অধ্যক্ষ পদে কাজ করেন। এ সময় পশ্চিম এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ থেকে রোগীরা নিরাময়ের আশায় তাঁর কাছে ছুটে আসত।

আল-রাজির চিকিৎসা প্রণালী ছিল আধুনিক আর শিক্ষা প্রণালীও ছিল উন্নত। তিনি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সম্পর্কে হাতে-কলমে শিক্ষা দিতেন এবং রোগীর পাশে থেকে তাদের সেবা করার উপদেশ দিতেন। সার্জারি বা শল্যচিকিৎসায়ও আল-রাজির অত্যন্ত সুনাম ছিল। আল-রাজির হাতে চিকিৎসালাভ করাকে রোগীরা আল্লাহর নিয়ামত বলে মনে করত। ফলে আল-রাজির খ্যাতি, সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে তিনি প্রচুর অর্থও কামাই করেন। এভাবে প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় চিকিৎসা পেশায় তিনি নিয়োজিত থাকেন।

আল-রাজি চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি গবেষণার কাজও করতেন। তিনি নানা ধরনের অ্যালকোহলিত স্পিরিট আবিষ্কার করেন। কৃত্রিম উপায়ে বরফ তৈরি করার প্রণালী আল-রাজি উদ্ভাবন করেন। তিনি তাঁর ব্যস্ততার মধ্যেও গ্রন্থ রচনার কাজ করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আলকেমি বিষয়ে ‘কিতাবুল-আসরার’ বা রহস্যের গ্রন্থ নামক একখানি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। ১১৮৭ সালে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়। এই গ্রন্থ চতুর্দশ শতক পর্যন্ত রসায়নশাস্ত্রের প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে সারা ইউরোপে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে চালু ছিল। তবে চিকিৎসাশাস্ত্রে আল-রাজির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অবদান ছিল। তিনি কমবেশি ২০০ কিতাব রচনা করেন। এর মধ্যে ১০০ টি হলো চিকিৎসাশাস্ত্রের তাঁর গ্রন্থে।

বসন্ত ও হাম সম্পর্কে ‘আল জুদারি ওয়াল হাসবাহ’ নামক পুস্তক রচনা হলো আল-রাজির সবচেয়ে বড় কীর্তি। ‘আল জুদারি ওয়াল হাসবাহ’ পুস্তকে গুটিবসন্ত ও হাম রোগের লক্ষণের সঠিক বিবরণ ও পার্থক্য লিপিবদ্ধ করেন, যা তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। ওই পুস্তক ইংরেজি, লাতিন ও ইউরোপীয় অন্য ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থের মধ্যে ‘এল হাওয়াই’ সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। ওই গ্রন্থ অনূদিত হয়েছিল ‘লিবার কন্টিনেন্স’ নামে লাতিন ভাষায়। আল-রাজির চিকিৎসা বিষয়ক আরেকটি ছোট গ্রন্থ ‘মানসুরি’ বা ‘লবার আলমানসোরিস’। এটি তিনি মানসুর ইবনে ইসহাক নামের জনৈক শাসককে উৎসর্গ করেছিলেন। ওই গ্রন্থে ভ্রমণকারীর জন্য চিকিৎসা উপদেশ, বিষাক্ত প্রাণীর দংশনের প্রতিকারসহ অন্যান্য বিষয় আলোচিত হয়েছে।

চিকিৎসা ও দর্শন ছাড়াও জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যামিতি, খনিজবিদ্যা, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেন আল-রাজি। শেষ বয়সে এসে আল-রাজি অন্ধ হয়ে পড়েন। প্রায় ৬৮ বছর বয়সে ৯২৫ সালে এই মহান বিজ্ঞানী আফগানিস্তানের হেরাত নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন।

চিকিৎসা শাস্ত্রে আল-রাজি

বিজ্ঞাপন




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও
Share via
Copy link
© ২০২৩- সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । হক কথা ২৪.নেট
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )
Share via
Copy link