● বৃহস্পতিবার, এপ্রিল 25, 2024 | 02:24 পূর্বাহ্ন

বউ

নাম বললে বউ থাকবে না

ইমাম আবু হানিফা (রঃ) এর যুগে এক ব্যক্তির বাড়ীতে চুরি হল। চুরি করার সময় বাড়ীর মালিক চোরকে চিনে ফেলতেই চোর ধমকি দিয়ে মালিককে বলল, “যদি এই চুরির ব্যাপারে আমার নাম কাউকে বলে দাও তবে তোমার বউ তালাক হবে- এই কথা তুমি মুখে উচ্চারণ করে বল, নচেৎ তােমাকে এখনই প্রাণে বধ করব।” মালিক প্রাণের-ভয়ে বলল, “যদি আমি চুরির ব্যাপারে তােমার নাম কাউকে বলে দেই তবে আমার স্ত্রী তিন তালাক হবে।” এই কথা উচ্চারণ করিয়ে চোর পালিয়ে গেল।

পরদিন সকালে চুরির শােকে মালিক দিশাহারা হয়ে পড়ল। আরাে কষ্ট হলাে এজন্য যে, চোরকে সামনে ঘুরে বেড়াতে দেখেও কাউকে বলতে পারছেন না। বললেই বউ তালাক হয়ে যাবে। অতঃপর ইমাম আবু হানিফা (রঃ) এর কথা তার মনে পড়ে গেল। দিশাহারা লােকটি ছুটে গেল হযরতের খেদমতে। বলল, “হুযুর এই পাড়ারই একজন লােক গত রাত্রে আমার বাড়ীতে চুরি করেছে। কিন্তু তার পরিচয় বলে দিলে আমার বউ তালাক হয়ে যাবে। সে চুরি করে যাওয়ার সময় আমাকে ভয় দেখিয়ে শর্তের তালাকের কথা উচ্চারণ করিয়ে গেছে।” ইমাম আবু হানিফা (রঃ) বললেন, “চিন্তার কোনাে কারণ নাই, চোর ধরা যাবে। তােমার বউ তালাক হবে না।”

ইমাম সাহেবের এই কথা শুনে সবাই অবাক হলাে। চোরের পরিচয় বলে দিলে কোনাে অবস্থায়ই বউ তালাক না হয়ে পারে না। পরে আলেমগণ বলাবলি করতে লাগলেন, ইমাম সাহেব মাআসালায় হের-ফর করে এবার বদনামের ভাগী হবেন কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু ইমাম সাহেব বাড়ীর মালিককে ডেকে গােপনে বলে দিলেন “যারা চুরি করেনি তারা তােমার সামনে আসলে বলো, ‘এরা চুরি করেনি।’ আর যে ব্যক্তি চুরি করেছে সে তােমার সামনে আসলে চুপ করে থাকবা।”

অতঃপর জুমুআর নামায শেষে মসজিদের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেয়ার হুকুম দিয়ে তিনি এবং বাড়ীর মালিক একটামাত্র খােলা দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। খােলা দরজাটি দিয়ে একটি করে লােক বের হয়ে যেতে লাগল আর ইমাম সাহেব মালিককে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, “এই লােকটি চুরি করেছে?” মালিক বলে, “না এই লােক চুরি করেনি।” এইভাবে যত লোক বের হয়ে যায় মালিক ঐ একই কথা বলে। এর কিছুক্ষন পর একজন লােক বের হতেই, মালিককে জিজ্ঞেস করা হল; এই লােকটি কি চুরি করেছে? মালিক তখন চুপ করে রইল। সাথে সাথেই তিনি বুঝতে পারলেন এই লােকটিই চুরি করেছে। সুতরাং তাকে পাকড়াও করার হুকুম দিলেন। এভাবে চুরির কথা বলল না তাই বউ তালাকও হল না। অথচ চোর ধরা পড়ে গেল।

ইমাম আবু হানিফা (রঃ) ফেকাহর অনেক জটিল বিষয়সমূহকে এভাবেই সহজ ও সাবলীল করে মানুষের সামনে রেখে দিয়েছেন। ফলে মানুষ তাকে ইমাম আযম বা মহান ইমাম হিসেবে অন্তরে স্থান দিয়েছে। জীবনে তিনি কোনাে কথায় বা যুক্তিতে কারাে কাছে পরাজিত হননি। (মাওয়ায়েজ)

এই সম্পর্কিত আরও

আবুল কালাম
বিস্তারিত...
 আরবে ঈদের তারিখ ঘোষণা
বিস্তারিত...
813788_175
বিস্তারিত...
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
বিস্তারিত...
জান্নাতের ফুল
বিস্তারিত...
কাজী নজরুল ইসলাম
বিস্তারিত...