● শনিবার, এপ্রিল 27, 2024 | 10:50 পূর্বাহ্ন

গাড়ির ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বিশ্বের তৃতীয় শহর ঢাকা

যানবাহনের ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বিশ্বের তৃতীয় রাজধানী ঢাকা

বাংলাদেশে করোনার মহামারিতে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম নির্মল বায়ুর শহর হয়ে উঠেছিল রাজধানী ঢাকা। বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার এই শহর সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় নাম রেখেছে। গতকাল শনিবার (১৪ আগস্ট) কানাডার ভ্যানকুভারের পরই ঢাকার বাতাস ছিল সবচেয়ে খারাপ।

এই দূষণের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে যানবাহনের ধোঁয়া। এ কথা কয়েক বছর ধরেই বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায়ও বিষয়টি উঠে এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের শহর গুলোতে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, যানবাহনের ধোঁয়া থেকে দূষণের দিক দিয়ে ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ফলে এখানে মৃত্যুও বেশি হচ্ছে, বিশ্বের গড় মৃত্যুহারের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ। যানজট প্রবণ এলাকা গুলোতেই বেশি দূষণ হচ্ছে। তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানমাত্রার তুলনায় প্রায় চার গুণ।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল গবেষণায় বিশ্বের ১০ দেশের শহরে গাড়ির ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট দূষণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণা করেন যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ভারত, ইথিওপিয়া, ইরাক, মিসর, বাংলাদেশ, চীন, তানজানিয়া, কলম্বিয়া ও মালাবির ১৫ জন গবেষক।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, সামগ্রিকভাবে ঢাকায় বায়ুদূষণ বেড়ে চলেছে। কিন্তু কোন উৎস থেকে কী ধরনের দূষণ হচ্ছে, তা বুঝতে বিশ্বের জনবহুল ও মধ্যম আয়ের দেশের বড় শহর গুলোর ওপর গবেষণাটি করা হয়। রাজধানীতে বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে যানবাহনের ভূমিকা দ্রুত বাড়ছে, তাই এখন থেকে এসব উৎস বন্ধ না করলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।

গাড়ির ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বিশ্বের তৃতীয় শহর ঢাকা

গবেষণায় দেখা গেছে, গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণার (পিএম ২.৫)। ঢাকা শহরে বছরে গড়ে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা থাকে ৯২ মাইক্রোগ্রাম। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী এটা থাকার কথা ছিল ২৫ মাইক্রোগ্রাম। মূলত পুরাতন গাড়ি, নিম্নমানের জ্বালানি, যানজট, গাড়ির গতি ও সংখ্যার ভিত্তিতে এই দূষণ বাড়ে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন যাত্রী, পথচারী থেকে শুরু করে সড়কের পাশের বাসিন্দারা। ঢাকার বাতাস সকালে সবচেয়ে কম ও সন্ধ্যায় সবচেয়ে বেশি দূষিত থাকে। এখানে ৩ লাখ ৩৫ হাজার গাড়ি চলে ১ হাজার ৬৪০ বর্গকিলোমিটারে। ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে বাসিন্দাদের প্রায় আড়াই শতাংশ। তারা যখন গাড়ির গ্লাস নামান শুধু তখনই দূষণের শিকার হয়। আর বাকিরা বাস, হেঁটে ও রিকশায় চলাচল করার কারণে তাদের প্রায় সবাই দূষণের কবলে পড়ে। প্রতি ঘন্টায় গাড়ির গতি থাকে ১৪ কিলোমিটার। ফলে বেশি কালো ধোয়া বের হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সময় মানুষ দূষিত বাতাসের মধ্যে থাকে।

গাড়ি থেকে নির্গত দূষিত বাতাসের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির দিক থেকে ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দারুস সালাম ও ব্লানতাওরি। দারুস সালামে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় আড়াইজনের মৃত্যু হয় এই দূষণে। ঢাকা ও ব্লানতাওরি শহরে মারা যায় একজন করে। যেখানে এই দূষণে বিশ্বে গড়ে ১০ লাখ মানুষে সর্বোচ্চ একজনের মৃত্যু হয়।

যন্ত্র নেই বিআরটিএর ঢাকায় কোন গাড়ি চলতে পারবে, আর কোনটা পারবে না, সেই সনদ দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কাছে গাড়ির ধোঁয়া মাপার যন্ত্র নেই। গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে চোখে দেখে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই যন্ত্র কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরপরই ধোয়া দূষণ রোধে কাজ শুরু হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) সৈয়দ নজমূল আহসান বলেন, তারা ঢাকার বায়ুমান উন্নতির জন্য অভিযান বাড়াচ্ছেন।

এই সম্পর্কিত আরও

আবুল কালাম
বিস্তারিত...
 আরবে ঈদের তারিখ ঘোষণা
বিস্তারিত...
813788_175
বিস্তারিত...
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
বিস্তারিত...
জান্নাতের ফুল
বিস্তারিত...
কাজী নজরুল ইসলাম
বিস্তারিত...